রোমান্স
Discover all the "রোমান্স" related stories

ত্রিধারে তরঙ্গলীলা | পর্ব – ৭০
একটি একটি করে দিন গড়াচ্ছে। পূর্বের চেয়েও অধিক অস্থির হয়ে ওঠছে সুহাস। প্রতিনিয়ত তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে নামীর সাথে কাটানো এক একটা মুহুর্ত। রাত গভীর হলে যখনি দু’চোখের পাতা এক হয় দুঃস্বপ্নেরা ছিন্নভিন্ন করে দেয় হৃদয়। নির্ঘুম বা দুঃস্বপ্ন দু’টোর একটিকে নিয়েই প্রতিটি রাত পার করছে সে। যেন এক রাতজাগা পাখি৷

ত্রিধারে তরঙ্গলীলা | পর্ব – ৬৯
আরো একটি নির্ঘুম রাত৷ এ কী বীভৎসতা? এ কোন দহনে পুড়াচ্ছে নামীদামি? সুহাস কী সইতে পারে তার সুহাসিনীর পাষণ্ডতা? পারে না তো… তাই তো তীব্র যন্ত্রণা বুকে পুষে দু’রাত নির্ঘুম কাটিয়ে দিল। গোটা একটা রাত কেটে গেল প্রিয়জন হারানোর শোকে।

ত্রিধারে তরঙ্গলীলা | পর্ব – ৬৭
দীর্ঘদিন পর সৌধর কল পায় নিধি৷ যে ছেলেটা এক সময় তার সঙ্গে প্রাণখুলে কথা বলত৷ আজ সে যেন প্রাণ বেঁধে উচ্চারণ করল এক একটা শব্দ। একদিন যার কণ্ঠস্বরের প্রগাঢ় নমনীয়তার স্পর্শ সে পেয়েছে। আজ তার প্রকট রুক্ষতা পেয়ে মনটা কেমন বিষণ্ন হয়ে গেল। স্পষ্টভাষী সৌধ কণ্ঠে কাঠিন্য ধরে বলল, ‘ হ্যালো নিধি? ‘

ত্রিধারে তরঙ্গলীলা | পর্ব – ৬৬
বৃষ্টি থেমেছে। জানালার থাই গ্লাসে বৃষ্টিফোঁটাদের চিহ্ন রয়ে গেছে। সেদিকে নির্নিমেষে তাকিয়ে অজস্র চিন্তায় নিমজ্জিত সিমরান। এ পৃথিবীতে আগত সবকিছুই বিদায়বেলা চিহ্ন রেখে যায়। পৃথিবীতে বৃষ্টি নেমেছিল। সে বৃষ্টি থেমেও গেছে। রেখে গেছে জানালার থাই গ্লাসে চিহ্ন। ঠিক তেমনি নামী এসেছিল সুহাসের জীবনে। চলেও গেছে। চিহ্ন হিসেবে রেখে গেছে এক গুচ্ছ ভালোবাসাময় স্মৃতি।

ত্রিধারে তরঙ্গলীলা | পর্ব – ৬৫
ভোর রাত থেকে ঝুম বৃষ্টি। আজ সারাটা দিন বৃষ্টির জলে ভেজা৷ এই বৃষ্টিস্নাত পরিবেশেই সম্পন্ন হলো সৌধ, সিনুর বউভাতের আনুষ্ঠান৷ অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শেষে সিমরানকে তার ঘরে নিয়ে আসা হয়েছে। ভারি পোশাক ছেড়ে হালকা পোশাকে তৈরি হতে বলেছে সবাই৷ সৌধ আত্মীয়, স্বজন বন্ধু, বান্ধবীদের সঙ্গে গল্পে ব্যস্ত।

ত্রিধারে তরঙ্গলীলা | পর্ব – ৬৪
নিধি চমৎকার একটি মেয়ে৷ প্রবল আত্মমর্যাদা সম্পন্ন একজন নারী৷ ওর সম্পর্কে বিয়ের আগে এমনই ধারণা ছিল অর্পণের৷ বিয়ের পর সেই ধারণায় চিড় ধরতে শুরু করলেও ধারণাটি পুরোপুরি মিথ্যে প্রমাণিত হয়নি৷ কিছু ভুল, মানসিক দ্বন্দ্ব মেয়েটাকে গুলিয়ে ফেলেছিল৷ আঘাত এনেছিল ব্যক্তিত্বে৷ যা নিয়ে সংশয়ে ছিল অর্পণ। আজ সে সংশয় পুরোপুরি কেটে গেছে৷

ত্রিধারে তরঙ্গলীলা | পর্ব – ৬৩
কন্যাকে পাত্রস্থ করার পর বিদায়বেলা।হৃদয়বিদারক এক মুহুর্ত। প্রতিটি নারীর জীবনে এ মুহুর্তটি অত্যন্ত মর্মভেদী৷ সোহান খন্দকার একহাতে সৌধর হাত ধরে আছে। অপর হাতে সিমরানের হাত৷ নিজের আবেগ, মায়া, ভালোবাসা, স্নেহ সমস্ত কিছু বুকের ভেতর চাপা দিয়ে ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকানোর চেষ্টা করল সে।

ত্রিধারে তরঙ্গলীলা | পর্ব – ৬২
‘ বর এসেছে, বর এসেছে। ‘ চারিদিকে এহেন বাক্যে উচ্চরোল ভেসে এলো। ধক করে ওঠল তীব্র কষ্টে জর্জরিত কনের বুকখানি। তাকে ঘিরে রয়েছে সকলে। প্রাচী, ফারাহ আর কাজিনরা গেছে বরের গেট ধরতে৷ এমপি পুত্র, তার ওপর পেশায় একজন ডক্টর। কনে পক্ষের দাবি দেড় লাখ টাকা। তর্কবিতর্ক শেষে ছাড় দিতে পারে৷

ত্রিধারে তরঙ্গলীলা | পর্ব – ৬১
ভোরের স্নিগ্ধ আলোকরশ্মি চোখে পড়তেই ঘুম ভেঙে যায় নিধির৷ ক্ষণকাল ব্যয় করে মস্তিষ্ক সজাগ করে। পাশে তাকিয়ে দেখে অর্পণ ঘুমিয়ে৷ বুকের মাঝে অনিরূপকে আগলে নিয়ে। নিষ্পাপ শিশুটি বাবার বক্ষদেশে কী নির্ভার, প্রশান্তিময় ঘুম ঘুমাচ্ছে৷ দৃষ্টিজোড়ায় মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে। স্মিত হেসে মুগ্ধ দৃষ্টিদ্বয় ফিরিয়ে নেয় নিধি৷ ত্বরিত খোলা চুলে হাত চালায়।

ত্রিধারে তরঙ্গলীলা | পর্ব – ৫৭
মনের ভেতর অদ্ভুত অশান্তি চলছে। কাউকে ভালো লাগছে না। কোনোকিছুতে মন বসছে না। ঘরের দরজা বন্ধ করে বিবশ মুখে বসে রইল সিমরান। একটু আগে তার কাছে সুহাস এসেছিল। ভীষণ ক্রুদ্ধ হয়ে প্রশ্ন করেছে, ‘ সৌধ ফোন করেছিল? ‘ সে জবাব দেয়, ‘ হ্যাঁ। ‘ ‘ কী বলল? ‘ ‘ সন্ধ্যায় বেরুবে।

ত্রিধারে তরঙ্গলীলা | পর্ব – ৫৬
সময় গড়াল ঢালু রাস্তায় নিচের দিকে গড়িয়ে পড়ার মতো৷ বিয়ের ছুটিতে বাড়ি এসেছে সৌধ। একমাসের জন্য স্মৃতি আপু আর দুলাভাইও এসেছে৷ বড়ো ভাই সৌরভ এসেছে এক সপ্তাহ আগে। চৌধুরী বাড়িতে বিয়ে মানেই বিরাট ব্যাপার। একমাস আগে থেকেই তোরজোড় শুরু হয়৷ স্মৃতিসৌধ নামক আলিশান বাড়িটা আত্মীয়স্বজনে ভরে ওঠে।

ত্রিধারে তরঙ্গলীলা | পর্ব – ৫১
সংসার জীবন সম্পর্কে ধারণা কম সিমরানের। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেকার তিক্ত সম্পর্কে ধারণা বেশ৷ ছোটো থেকে বাবা মায়ের মধ্যে তিক্ততা দেখে বড়ো হয়েছে। ঝগড়া, বিবাধ করে কতকাল বাবা, মা একে অপরের মুখ দেখেনি হিসেব ছাড়া। তবে শেষদিকে এসবের অবসান ঘটেছিল। আফসোস একটাই সময়টা ছিল খুবই অল্প। দুঃখের দিনগুলো এত বেশি।